শেষ মুহুর্তে প্রাণ ফিরেছে খুলনার বৃক্ষমেলার। বৃষ্টির কারণে বেচা-কেনায় খরা গেলেও শেষ মুহুর্তে বেড়েছে ক্রেতা-দর্শনার্থী ও বৃক্ষপ্রেমী আনাগোনা। মেলার স্টলগুলোতে বেড়েছে বিক্রিও।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) পর্যন্ত ৪৯ লাখ ৯৬৫ টাকা মূল্যের ৩৬ হাজার ২৯২টি গাছ বিক্রি হয়েছে।
এদিকে মেলার স্টল মালিকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মেলার এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে মেলার সময়। গত ৭ জুলাই শুরু এই মেলা চলবে আগামী ৩ আগস্ট পর্যন্ত।
খুলনা নার্সারী মালিক সমিতির সভাপতি এস এম বদরুল আলম রয়েল বলেন, মেলার শুরুর দিকে বেচা-কেনা কম ছিল। আর বৃষ্টির কারণে মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীর আনাগোনা কমে যায়। ২৭ জুলাই মেলা শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে স্টল মালিকরা মেলার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করে। মেলা আয়োজক কমিটি ৭ দিন মেলার সময় বাড়িয়েছে। ফলে আগামী ৩ আগস্ট পর্যন্ত মেলা চলবে।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, খুলনা সার্কিট হাউজ টেনিস গ্রাউন্ডের পাশে আয়োজিত বৃক্ষমেলায় বিভিন্ন ধরনের ফল, ফুল, মসলা এবং ভেষজসহ বিচিত্র ধরণের চারা থরে থরে সাজানো রয়েছে। নার্সারী স্টলের পাশাপাশি রয়েছে ব্যতিক্রমী স্টলও। এসব স্টলে গাছের জৈব সার, ইউরিয়া সার, নানা ধরণের ইন্ডোর প্লান্টের বীজ, গার্ডেন টুলস, ইন্ডোর-আউটডোরে গাছ লাগানোর বিভিন্ন টবসহ ব্যতিক্রমী সরঞ্জামাদি পাওয়া যাচ্ছে।
গ্রীণগ্লোব নার্সারীর মালিক মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছরের থেকে এ বছর ক্রয়-বিক্রয় বেশ ভালো, আমরা সন্তুষ্ট’।
মেলায় দেখা মিলছে বিভিন্ন ধরণের মধু ও তেলের স্টলেরও। আফিক এন্টারপ্রাইজ স্টলের মালিক ওলিউল্লাহ বলেন, ‘গাছের সঙ্গে মৌমাছি ওতপ্রোত ভাবে জড়িত, গাছের পরাগায়ণের ক্ষেত্রে মৌমাছির ভূমিকা অনস্বীকার্য। মৌমাছি প্রাকৃতিক ভাবে মধু সংগ্রহ করে গাছের ফুল থেকে, আর সেই মধু আমাদের খাদ্য হিসাবে ব্যবহার হয়। এই বিষয়গুলি তুলে ধরতেই আমাদের এই উদ্যোগ।’
এছাড়া স্টলগুলোতে ইন্ডোর প্লান্ট, জলজ-গাছ ও টেরারিয়াম, লাইভ প্লান্ট এ্যাকুরিয়াম বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আছে বিভিন্ন প্রকার রঙিন মাছ। শিশুরা এই স্টলে ঘুরতে এসে খুবই আনন্দ পাচ্ছে।
এই মেলায় একটি ব্যতিক্রমী স্টল রয়েছে। স্টলে রয়েছে গল্প,কাব্য,উপন্যাসহ নানান ধরণের বই। আসালিয়া লাইব্রেরী স্টলের স্বত্তাধিকারী মো. বাবু বলেন, বৃক্ষমেলায় বইয়ের বেচা-কেনা খুবই সামান্য। মানুষ এখন আর ছাপা বই পড়তে চায় না, এখন অনলাইনের দিকে ঝুকেছে। তবুও মানুষের সাথে যেন ছাপা বইয়ের সংযোগ ঘটে তাই আমাদের এখানে আসা।’
মেলা আয়োজকদের সূত্রে জানা যায়, এবারের মেলায় ৬১টি স্টল রয়েছে। নার্সারীর পাশাপাশি সরকারি ১০টি প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকছে।
খুলনা গেজেট/রহমতউল্লাহ/এসএস